চিকিৎসা বর্জ্যের অব্যবস্থাপনা

লিখেছেনঃ সুলতানা রাফিয়া, রংপুর থেকে

2010 সালে বাংলাদেশের সপ্তম বিভাগ হিসেবে যাত্রা শুরু করে রংপুর। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে গঠিত ।বিভাগ ঘোষণার পর বিভাগীয় শহরে উত্তীর্ণকরণের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে না ওঠা,একসময়ের শান্ত ও শান্তিপূর্ণ শহর রংপুরকে অশান্তির শহরে পরিণত করেছে।বিভাগ ঘোষণার আগে থেকেই আশেপাশের জেলার লোকেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসত। বিভাগ ঘোষণার পর তা আরও বেড়ে গিয়েছে ।সাধারণ ও করোনা চিকিৎসার বর্জ্য যথাযথ ব্যবস্থাপনা না করায় সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য হুমকীর মুখে পড়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের 2018 সালের চিকিৎসা বর্জ্যের নিরাপদ নিষ্কাশন আইন ছাড়া তেমন কোন পরিকল্পনার কথা জানা যায় না। এরই মধ্যে করোনার সংক্রমণ যেন পরিস্থিতি আরো খারাপ করে তুলেছে ।রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন সড়কে ফেলা হচ্ছে রোগীদের ব্যবহৃত রক্ত,সূঁচ,সিরিন্জ্ঞ,গজ,ব্যান্ডেজসহ  হাসপাতালের নানা চিকিৎসা বর্জ্য।

চিকিৎসা বর্জ্যের যথাযথ ব্যবস্থাপনা না থাকার প্রধান কারণ :

১। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এর প্রধান কারণ। এছাড়াও যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাব এর জন্য দায়ী ।

২। মেডিকেল হাসপাতাল ও ক্লিনিকে বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকা।

৩। কঠিন ও তরল নিষ্কাশনের জন্য আলাদা ব্যবস্থা না থাকা।

বর্জ্যের প্রভাব:

 মেডিকেল বর্জ্য নিষ্কাশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।যেখানে সেখানে খোলা অবস্থায় থাকা চিকিৎসা বর্জ্য ছোঁয়াচে রোগ যেমন চর্মরোগ থেকে শুরু করে সংক্রামক রোগের (হেপাটাইটিস বি ও সি,করোনা)বিস্তার ঘটায়।এরই মধ্যে করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত যন্ত্রের যত্রতত্র পড়ে থাকা করো না পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে।

প্রস্তাবনা ও উপসংহার:

১। প্রতিটি মেডিকেল ,হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থাপনার থাকতে হবে।

২।  কঠিন বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলতে হবে অটোক্লেভ বা ইনসিনেরেটরের মাধ্যমে।

৩। তরল বর্জ্য বিভিন্ন প্লান্টের মাধ্যমে ট্রিট করে সাধারণ তরল বর্জ্য নিষ্কাশন করতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী, হাসপাতাল ডিজাইনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ চিকিৎসা বর্জ্যের নিরাপদ নিষ্কাশন ব্যবস্থা। বাংলাদেশেও হাসপাতালে বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য সুনির্দিষ্ট এবং সুচিন্তিত ব্যবস্থাপনা থাকা অপরিহার্য।বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর চিকিৎসা বর্জ্যের অব্যবস্থাপনার জন্য 52 লাখ মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়ছে যার মধ্যে 40 লাখ শিশু।

Leave a Comment

Scroll to Top