ফরিদপুরের উদ্যোক্তা সংস্কৃতি: সম্ভাবনা ও বাঁধা

লিখেছেনঃ রাগীব আনজুম, ফরিদপুর সদর, ফরিদপুর থেকে

ঢাকা জেলার অদূরেই ফরিদপুর জেলায় বর্তমানে বাড়ছে উদ্যোক্তা সংস্কৃতি। যদিও বেড়েছে উদ্যোক্তার সংখ্যা তবে, নেই পর্যাপ্ত মানসিক বা পারিপার্শ্বিক সমর্থন, সুলভ অর্থায়নের সুযোগ, প্রাসঙ্গিক প্রশিক্ষণের সুযোগ ও প্রাসঙ্গিক তথ্যবলির সহজলভ্যতা। তাই আগ্রহ থাকলেও ফরিদপুরে স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় উদ্যোক্তা হতে আসা অনেকেই সম্মুখীন হতে হচ্ছে নানা সমস্যায়। এই সমস্যাগুলোকে সমাধানের মাধ্যমে এই আগ্রহী ও উদ্যমী জনশক্তিকে দেশের কল্যাণে আরও সহজে পাওয়া সম্ভব যা ফরিদপুরের জন্য হবে এক আশার বার্তা ও সারা দেশের জন্য আদর্শ দৃষ্টান্ত।

সমস্যার প্রকৃতি-

ফরিদপুর বিভাগীয় শহর না হয়ায় এখানে উদ্যোক্তা সংস্কৃতি এসেছে একদমই ‘অনলাইন কালচার’-এর হাত ধরে। তাই দেশের অন্যান্য শহরে যেই পরিমান মানসিকভাবে সমর্থন একজন উদ্যোক্তা পেয়ে থাকেন ফরিদপুরে তা তুলনামূলক কম। বিভাগীয় শহর না হওয়ায় স্বাভাবিক দীর্ঘসূত্রতা তো আছেই পাশাপাশি যোগ হয়েছে উৎপাদনমূখী শিল্পের সম্পর্কে ধারণা ও উৎসাহ না থাকা। তাই অধিকাংশ উদ্যোগই সীমাবদ্ধ থাকছে শুধুই অনলাইন কেন্দ্রিক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপনণের মধ্যে। এর পাশাপাশি, বিসিক-সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যে ট্রেনিংগুলো দেওয়া হচ্ছে সেগুলোর পর্যাপ্ত তথ্য সুবিন্যস্তভাবে এক জায়গায় কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। সেজন্য তথ্য সংগ্রহেও সম্মুখীন হতে হয় এক বিশাল ভোগান্তির। তাই দিনশেষে সবাই পর্যাপ্ত আশা ও সম্ভাবনা নিয়ে শুরু করলেও অধিকাংশকেই না সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থামতে হচ্ছে মাঝপথে। 

কারণ-

কেন্দ্রিয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে যারা এই সংক্রান্ত ব্যবসা পরিচালনা করছেন তাদের সাথে যোগাযোগ বা সামঞ্জস্য না থাকা

পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত উপযুক্ত মাধ্যমে প্রচারণার অভাব

পারিবারিক ও সামাজিকভাবে পর্যাপ্ত সমর্থন না থাকা 

অর্থায়ন ও ঋণ প্রদান সংক্রান্ত দীর্ঘসূত্রতা 

প্রভাব-

এই সমস্যাগুলোর ফলে উদ্যোক্তা সংস্কৃতি দিনদিন অবদমিত হচ্ছে। পারিপার্শ্বিকভাবে অন্যান্য জেলা বা বিভাগীয় ষরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি নিগ্রহের স্বীকার হতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের। 

প্রস্তাবনা-

উদ্যোক্তাদের ও তাদের পরিবারকে মানসিক কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা করা

জাতীয় পর্যায়ে যারা এই সংক্রান্ত ব্যবসায় কাজ করছেন তাদের সাথে যোগাযোগ করে দেওয়ার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জনের ব্যবস্থা করে দেওয়া

বিপনন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ উদ্যোগগুলোকে কীভাবে স্থানীয়ভাবে উৎপাদনমূখী শিল্পে রূপান্তর করা যায় এই বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া (এক্ষেত্রে, ফরিদপুরের নিজেস্ব বিখ্যাত পণ্য- পাটজাত দ্রব্য এর প্রচারণায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে)

প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত তথ্যবলি পাওয়ার জন্য ওয়ান-স্টর্দিষ্ট অনলাইন ঠিকানার ব্যবস্থা করা 

অর্থায়ন ও ঋণ প্রদান সংক্রান্ত দীর্ঘসূত্রতা দূর করা। কীভাবে সহজে এগুলো পাওয়া যায় এই সংক্রান্ত প্রচারণা চলানো।

অনলাইন ব্যবসাগুলোকে অফলাইনে কীভাবে নিয়ে আসা যায় এই ধরণের সহায়তা দেওয়া।

Leave a Comment

Scroll to Top