লিঙ্গগত স্টেরিওটাইপ ও বৈষম্য!
লিঙ্গগত স্টেরিওটাইপ শিশুদের মনোজগতে শৈশব থেকেই অন্তর্নিহিত । এটি তাদের খেলনা নির্বাচন, শিক্ষার বিষয়, এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার ও জীবনকে প্রভাবিত করে। প্রাচীন বিশ্বাস পুরুষদের শক্তিশালী নেতা ও যোদ্ধা হিসেবে চিত্রিত করে। ঐতিহাসিক প্রমাণ, যেমন নৃতাত্ত্বিক অনুসন্ধানগুলো, পুরুষদেরকে শিকার ও যুদ্ধ করতে দেখায়, নারীদের ভূমিকা এসব চিত্রে অনুপস্থিত।
নারীদের খুব বেশি সময় ধরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের অনুমতি দেয়া হত না এবং সময়ের সাথে সাথে বাস্তবতার পরিবর্তন হয়েছে। তবুও নারীদের কাছ থেকে বাড়ির ভিতরে এবং বাহিরে উভয় ক্ষেত্রে অবদান রাখার (দ্বৈত দায়িত্ব) চিরন্তন প্রত্যাশার কারণে কিছু সামাজিক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তার ওপর, NPR-এর এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে বেশিরভাগ মানুষ এখনো বিশ্বাস করে যে সমাজ কর্মক্ষেত্রে পুরুষদের অবদানকে বেশি মূল্য দেয়, তাদের পারিবারিক ভূমিকার চেয়ে।
নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্যের অন্যতম কারণ হলো বৈষম্যমূলক সামাজিকীকরণ ও প্রচলিত ভুল ধারণা। যেমন, একটি সাধারণ ভ্রান্ত ধারণা হল – STEM (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিত) ক্ষেত্রে পুরুষদের সংখ্যা নারীদের চেয়ে বেশি হওয়ার কারণ, নারীরা পুরুষদের মতো কোনো প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে কাজ করতে সক্ষম নয়। ২০২২ সালে বাংলাদেশি গিগ ওয়ার্কারদের উপর করা একটি গবেষণায় (পুরুষ ২৪২, নারী ২০১ জন) এই লিঙ্গগত বৈষম্যের প্রমাণ উঠে এসেছে।
যদিও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হয়েছে, তবুও অনেকে পুরুষদের কর্মক্ষেত্রে অবদানকে তাদের বাড়ির ভূমিকার চেয়ে বেশি মূল্যবান বলে মনে করে। কিছু ভুল ধারণা, যেমন STEM ক্ষেত্রে নারীরা কম সক্ষম, চলমান লিঙ্গ ভারসাম্যহীনতা তুলে ধরে। এই স্টেরিওটাইপগুলি ভাঙতে নারী মেন্টর ও রোল মডেল গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত গ্রামীণ এলাকার অল্পবয়সী মেয়েদের জন্য যাদের নেতৃত্ব বা প্রযুক্তিগত ভূমিকায় নারীদের ভূমিকা নিয়ে অবগত নয়। এই পক্ষপাতদুষ্টতা মোকাবেলা করার জন্য তাদের উৎস এবং প্রভাব সম্পর্কে গভীর বোঝার প্রয়োজন।



