কমিক কুইজ: জেন্ডার নর্মস
জেন্ডার নর্মস (Gender Norms) বা লিঙ্গ নিয়ম হলো সামাজিক প্রত্যাশা, যা নির্ধারণ করে পুরুষ ও নারীরা কীভাবে আচরণ করবে। এসব ধারণা, প্রায়শই গভীরভাবে আমাদের মাঝে অন্তর্নিহিত হয়ে, শিশুর আত্মবিশ্বাস, সম্ভাবনা এবং সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে। এগুলো বেক্তি ধারা নয়, বরং সামাজিকভাবে প্রয়োগিত হয় এবং সমাজের রীতিনীতির ওপর নির্ভর করে এই প্রত্যাশাগুলো রক্ষণশীল বা প্রগতিশীল হতে পারে।
একটি বহুল প্রচলিত লিঙ্গবৈষম্যমূলক ধারণা হলো যে “পুরুষই পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী।” এই দৃষ্টিভঙ্গি পুরুষদেরকে অর্থ উপার্জনের মূল দায়িত্বে স্থাপন করে, যেখানে তাদেরকে প্রায়শই উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ বা প্রযুক্তিনির্ভর পেশায় নিয়োজিত হওয়ার প্রত্যাশা করা হয়। ফলস্বরূপ, পরিবারের আর্থিক সহায়তা প্রদানের দায়িত্বটি সামাজিকভাবে পুরুষদের ওপর ন্যস্ত করা হয়ে থাকে।পুরুষদের লিঙ্গভিত্তিক নিয়মগুলিকে প্রতিরোধ করতে গার্হস্থ্য কাজের সামর্থ্যের প্রতি তাদের সংবেদনশীলতা বাড়াতে চেষ্টা করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, নারীরা কোনো অপরিচ্ছন্ন জায়গা দেখলে “আমার এটি পরিষ্কার করা প্রয়োজন” বলে ভাবতে পারেন, যেখানে পুরুষরা কেবল “ময়লা জমেছে” বলে লক্ষ্য করেন। ক্রমাগত সচেতন প্রচেষ্টা এবং অভ্যাস তৈরির মাধ্যমে আমরা কীভাবে বিশ্বকে উপলব্ধি করি তা আমরা পরিবর্তন করতে পারি এবং এই কমিক স্ট্রিপ আমাদের এই জিনিসটি বুঝতে সাহায্য করতে পারে। বিশেষ করে যেসব পরিবারে সন্তান রয়েছে, সেখানে প্রায়শই গৃহস্থালির কাজে সময় দেওয়া এবং পরিবারের যত্ন নেওয়ার বিষয়টি কে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। মহিলারা, চাকুরী থাকা সত্ত্বেও, গৃহস্থালির কাজে পুরুষদের থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি সময় ব্যয় করেন। গবেষণায় দেখা যায়, যেসব পরিবারের সন্তানসহ দুজন অর্থ উপার্জনকারী থাকেন সেসব পরিবারের বেশি দ্বন্দ্ব এবং উচ্চ স্ট্রেস থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে গৃহস্থলীর কাজের অসমানুপাতিক অংশগ্রহণের জন্য। স্বাস্থ্যের উপর লিঙ্গ সমতার সূচকের ২০২১ সালের একটি রিপোর্টের থেকে দেখা যায়, ৯১% মহিলা যাদের সন্তান আছে, তারা অন্তত দিনে এক ঘন্টা গৃহস্থালির কাজে ব্যয় করেন; যেখানে পুরুষ যাদের সন্তান আছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি ৩০%। সাম্প্রতিক পাওয়া ডাটা থেকে দেখা যায় যে, কর্মরত মহিলারা দিনে প্রায় ২.৩ ঘন্টা গৃহস্থালির কাজে ব্যয় করেন, যেখানে পুরুষরা করে থাকেন ১.৬ ঘন্টা।
এই অসামঞ্জস্যতা দূর করতে হলে পুরুষদের গৃহস্থালির কাজে আরও সক্রিয় অংশগ্রহনের পাশাপাশি সচেতনভাবে প্রচেষ্টার প্রয়োজন। সামাজিক পরিবর্তন কঠোর লিঙ্গভিত্তিক ভূমিকার চাপ কমাতে পারে, যা আরও সমতাভিত্তিক সম্পর্ক গঠনে সহায়ক এবং মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।





