মাদকাসক্তি ও যুবসমাজ

লিখেছেনঃ মাহমুদ হাসান, রাজশাহী থেকে

বর্তমানে একটি জিনিস ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা  হল মাদকসবেী যুবক যুবতীরা কিশোর গ্যাং গড়ে তুলছে যাদের  প্রত্যকেরে বয়স ১২২০ এর মধ্যে এবং তারা একসাথে মিলে নানারকম অন্যায় অপরাধ করে চলছে।  এমনকি তারা খুনরে মত অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা ও শান্তির নগরী খ্যাত  রাজশাহীও এসব কিশোর গ্যাংয়রে উত্তাপে উত্তপ্ত অশান্ত হয়ে উঠছে। একদল মাদকসবেী যুবকরে কারণে প্রতিনিয়ত কিছু  মেয়ে  নির্যাতনের শিকার  হচ্ছে। তারা পথে ঘাটে যেখানে  সেখানে মেয়েদেরে উত্যক্ত কররে, এ-র সাথে আছে এসিড সন্ত্রাস ও র্ধষণরে মতো ভয়ংকর ঘটনা।

মাদকাসক্তি প্রতিরোধে সরকার বহু আগে থেকেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আসছে। বাংলাদেশে ১৯৯০ সালে মাদকের অপব্যবহার অবৈধ পাচার রোধ,মাদকের ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে গণসচেতনতা বিকাশ মাদকাসক্তদের চিকিৎসা এবং পূণর্বাসনকল্পে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইন ১৯৯০ এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হয়।পরবর্তীতে ২০১৮ সালে আইন সংশোধন করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইন ২০১৮ নামে প্রণয়ন করা হয়।আর আইনকে বাস্তবাায়িত করতে প্রতিনিয়ত সরকারের বিভিন্ন ফোর্স যেমন: বিজিবি,র‍্যাব,পুলিশ ইত্যাদি দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং মাদকব্যবসায়ী মাদকসেবী উভয়কেই গ্রেফতার করছে। এছাড়াও মাদকসেবীদেও চিকিৎসার জন্য সরকার বিভিন্ন জেলায় মাদক নিরাময় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে।এসব নিরাময় কেন্দ্রে মাদক থেকে দূরে সরে আসার জন্য নেশাগ্রস্তদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এবং এসব নিরাময় কেন্দ্রে দরিদ্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।এছাড়াও মাদকাসক্তদের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় রিহ্যাব সেন্টার আছে। যেখানে তাদের নিবীড় পরিচর্যা করা হয়। বিশ্বে অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও প্রতিবছর ২৬ জুন মাদকদ্রব্য পাচার, অপব্যবহার বিরোধী দিবস পালন করে আসছে।তাছাড়াও রেডিও,টেলিভিশন,সংবাদপত্র ইত্যাদি গনমাধ্যমগুলোও সব সময় মাদক নিরাময়ে কাজ করছে। তারা মাদকাসক্তির ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে বিভিন্ন নাটক,ডকুমেন্টরি প্রচার করে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করছে। 

তবে দুঃখের বিষয় এটা যে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও সবাই সেসব মানছেনা। তারা অবাধে নেশা করছে তার পাশাপাশি করছে নানারকম দুষ্কর্ম।তারা দেশ জাতির জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে।এর পিছনে কারণ দেখতে গেলে দেখা যায় যে,বড় রাজনৈতিক দের  ছত্রছায়ায় যারা বেড়ে উঠছে তারা বেশিরভাগই মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত।শুধু তাই নয় দেশের অনেক বড় বড় ব্যবসায়ীও মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত।তাদেও বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা জলে বাস করে কুমীরের সাথে লড়াই করার মতোই কঠিন। তাই দেখা যায় যে অবাধে তারা মাদকের ব্যবসা করছে আর তাদের জঘন্য কাজের বলি হচ্ছে নিরীহ যুবসমাজ। যার কারণে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও দেশ থেকে মাদক নির্মুল করা সম্ভব হয়ে উঠছে না।

মাদকের অপব্যবহার রোধে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমীকা পালন করবে অভিভাবকেরা।তাদের উচিৎ সন্তানের সাথে বন্ধুভাবাপন্ন সম্পর্ক গড়ে তোলা। অনেক ¦চ্ছল পরিবারের বাবামা কে দেখা যায় সবসময় নিজেদের কাজের চাপে সন্তানদের সময় দিতে পারেনা।এক্ষেত্রে তাদের সন্তানকে সময় দেওয়া প্রয়োজন। তাদের সন্তানরা কার সাথে মেলামেশা করছে সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। একটা শিশুর জন্য পারিবারিক শিক্ষা সবচেয়ে বেশি কার্যকর।পারিবারিক শিক্ষাই মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। তাই ছোটবেলা থেকেই নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। মাদকের কুফল সম্পর্কে জানাতে হবে। বলা হয়শিক্ষক মানুষ গঠনের কারিগর তাই প্রাথমিক থেকে শুরু করে শিক্ষার প্রতিটি স্তরে মাদকের কুফল সম্পর্কিত শিক্ষা দিতে হবে।পাঠ্যপুস্তকে এখন সম্পর্কিত অধ্যায় যুক্ত হলেও তার প্রতি শিক্ষার্থীদেও আগ্রহ অত্যাধিক কম। শিক্ষকদের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে। যুবসমাজকে পড়ালেখার পাশাপাশি গঠনমূলক কাজের সাথে যুক্ত হতে হবে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন,খেলাধুলার ক্লাব,সাংস্কৃতিক সংঘের সাথে তাদেরকে যুক্ত করতে হবেতারা মানবসেবামূলক কাজে যুক্ত থাকলে মাদক থেকে দূরে থাকতে সক্ষম হবে।এবং সর্বোপরি এলাকায় এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গড়ে তুলতে হবে। অনেকসময় দেখা যায় যে মাদকাসক্ত কোন ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ফিরে এলেও সমাজ তাকে আগেরমত আর গ্রহণ করেনা। এক্ষেত্রে প্রথমত সমাজের সকলের উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে তার দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।তাকে সমাজের আর ১০ টা সুস্থস্বাভাবিক মানুষের মতো গ্রহণ করা।তাকে কর্মসংস্থানের সযোাগ করে দেওয়া।

Leave a Comment

Scroll to Top