সীতাকুণ্ডে ক্রমাগত পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট

লিখেছেনঃ  ইমন সুলতানা

সীতাকুণ্ড বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি শহর ও পৌরএলাকা। ভৌগলিকভাবে এটি চট্টগ্রাম শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত।সীতাকুণ্ড উপজেলা ৯টি ইউনিয়ন ও১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এখানে দেশের প্রথম ইকেপার্ক অবস্থিত, পাশাপাশি বিকল্প শক্তি প্রকল্প বিশেষকরে বায়ুশক্তি এবং ভূ-তাপীয় শক্তি প্রকল্প অবস্থিত।এছাড়াও  সীতাকুণ্ডের কুমিরায় রয়েছে বর্তমান বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পকারখানা। কৃষি প্রধান অঞ্চল সীতাকুণ্ডে বিভিন্ন শিল্পকারখানার অগ্রযাত্রা সূচিত হয়েছে বহুকাল পূর্বেই। আজও তা অব্যাহত রয়েছে। দেশের অন্যতম প্রাচীন এ জনপদের পরিশ্রমী মানুষ এভাবে কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যিক্ষেত্র প্রসারের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

সমস্যা: পরিবেশ দূষণ এ অঞ্চলের একটা বড় সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। কৃষি ও নগর সভ্যতা সম্প্রসারণের ফলে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ এ অঞ্চলে বসতি স্থাপনে বনাঞ্চল হ্রাস পাচ্ছে। অতিরিক্ত মানুষের চাহিদা মেটাতে অতিরিক্ত মৎস্য শিকার করা হচ্ছে। স্থলভাগের পানিদূষিত হচ্ছে। নির্বিচারে পাহাড় কাটা হচ্ছে, যত্র তত্র কলকারখানা গড়ে উঠছে। অপরিকল্পিতভাবে জাহাজ ভাঙ্গার ইয়ার্ড নির্মিত হচ্ছে যা পরিবেশের স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট করছে।প্রকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার ফলে ভূমিকম্প, জলোচ্ছাস ও ঝড়-ঝঞ্ঝার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে।

উল্লেখ্য যে, জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পে শ্রমিকদের যথাযথ নিরাপত্তার অভাবে  অহরহ দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনার তথ্য খুব সহজে সংগ্রহ করা যায় না। তথ্য সংগ্রহের সময় ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। পাওয়া যায় না মালিকদের। অনেক সময় ফেরত আসতে হয়। তা ছাড়া শ্রমিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জামেরও অভাব রয়েছে। অনেককে সরঞ্জাম দেওয়া হলেও সচেতনতার অভাবে তাঁরা তা ব্যবহার করেন না। অনেক মালিক আবার নিরাপত্তা সরঞ্জাম দেন না। যদি কর্মক্ষেত্রে সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়, তাহলে শ্রমিকদের জন্য সুবিধা হবে।

প্রস্তাবনা:পাহাড় কাটা নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহায়তার পাশাপাশি স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও প্রশাসন সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করা।জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পের শ্রমিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং দুর্ঘটনা রোধে শ্রমিকদের নিরাপত্তা সরঞ্জামের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন পর্যটন স্পট সমূহের পরিচর্যা ও সঠিক তদারকি নিশ্চিত করা।

উপসংহার: পরিশেষে বলতে চাই, পরিবেশ সম্পর্কে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা আমাদের দায়িত্ব। এ লক্ষ্যে  বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের ক্ষতিকর দিক গুলো নিয়ে প্রচার প্রচারণা করে এ কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারি।

Leave a Comment

Scroll to Top