মানসিক স্বাস্থ্য ও বাংলাদেশ এবং আমাদের ভাবনা

লিখেছেন: আফরা আনজুম ইশা, বেনজীর মাহমুদ , অ্যাসোসিয়েট
অলংকরন: মাইশা ফারাহ্
সম্পাদনায় : তাসফিয়া জামান মৌরী
২০২৩ সালে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য: মানসিক স্বাস্থ্য একটি সার্বজনীন মানবাধিকার যার জন্য প্রত্যেকের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি, মানসিক স্বাস্থ্যকে সবার জন্য বোধগম্য করা এবং মানসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষার অধিকার সম্পর্কে পদক্ষেপ গ্রহণে সবাইকে উৎসাহিত করা।
বাংলাদেশে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা বর্তমান সময়ের একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বিষয়। সাম্প্রতিক সময়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যাপক হারে আত্মহত্যার ঘটনা এই বিষয়টিকে আরো যেনো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার ক্রমশ বেড়েই চলেছে, যার পিছনে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতিই মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন এটি সরাসরি এবং সিদ্ধান্তমূলকভাবে মোকাবেলা করার সময় এসেছে।
তরুণদের দুর্বল মানসিক স্বাস্থ্য বাংলাদেশের জন্য একটি নীরব সংকট৷ অতিরিক্ত একাডেমিক চাপ, পারিবারিক প্রত্যাশা, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং সামাজিক কুসংস্কার এবং অবশ্যই জলবায়ু পরিবর্তন সহ একাধিক কারণ এই সংকট তীব্র করতে প্রধান ভূমিকা রাখছে । করোনা মহামারী-পরবর্তী সময়টি শুধুমাত্র এই উদ্বেগগুলোকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
আমাদের দেশের জনসংখ্যার চাহিদার তুলনায় মানসিক স্বাস্থ্য পরিসেবা খুবই কম। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় মানসিক স্বাস্থ্য সেবা খুবই সীমিত আকারে রয়েছে, যেটুকু রয়েছে সেটুকুও সমাজের কুসংস্কারাচ্ছন্ন অপ্রগতিশীল ধ্যান ধারণার জন্য যথাযথ সহযোগিতা দিতে পারে না। এছাড়াও ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্য সেবাদাকারীদের সংখ্যা সারা দেশ জুড়েই অপর্যাপ্ত।
যদিও সরকার ২০২২ সালে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য নীতি চালু করেছে, তবে এটি যে দেশের উন্নতিসাধনের স্বার্থে একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ নির্ণায়ক, সে স্বীকৃতি পেতেও অনেক সময় লেগেছে।
মানসিক স্বাস্থ্যসেবা SDG 3-এর গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি (স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা: স্বাস্থ্যকর জীবনধারা নিশ্চিত করা এবং সকল বয়সের সকলের জন্য সুস্থতা প্রচার করা)। লক্ষ্যগুলো হচ্ছে: ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিরোধ ও চিকিৎসার মাধ্যমে অসংক্রামক রোগ থেকে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষের অকালমৃত্যু হ্রাস করা এবং মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতাকে উন্নীত করা। SDG 3-এর এই লক্ষ্য পূরণের জন্য একটি সূক্ষ্ম অথচ রূপান্তরমূলক পদক্ষেপের প্রয়োজন। বাংলাদেশের যুবসমাজ যেনো তাদের জীবনের চ্যালেঞ্জগুলোকে কার্যকর ভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষমতা অর্জন করে এবং তাদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নতি সাধনের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুত্ব আরোপ করা অপরিহার্য। এ লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা সরকার এবং জনগণ সবার একান্ত কর্তব্য। সবাইকে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নীতি বাস্তবায়নে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

 

বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা এবং আমাদের করণীয় কি হতে পারে এ নিয়ে ওয়াইপিএফের আর্টিকেল সিরিজের প্রথম আর্টিকেল এটি।
দ্বিতীয় আর্টিকেলটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তৃতীয় আর্টিকেলটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন

 

References:

  1. https://www.aa.com.tr/…/nearly-600-students-in…/2799845
  2. https://www.newagebd.net/…/mental-health-is-that-even…
  3. https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC8554893/….
  4. https://www.thedailystar.net/…/contextualising-mental…
  5. https://www.tbsnews.net/…/85-students-blame-internet…
  6. https://www.dhakatribune.com/…/two-thirds-of-university…
Scroll to Top