লিখেছেনঃ মোহাম্মদ আল হাসিব
সূচনাঃ
মাদক এক ভয়ানক অস্ত্র যার প্রভাবে একটি মানবিক রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়। আন্তর্জাতিকভাবে মাদকাসক্তি মারাত্মক ব্যাধি হিসেবে পরিগণিত। মাদকের ক্ষতিকর মানসিক ও স্বাস্থ্যগত প্রভাবে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ছে আধুনিক রাষ্ট্রের উন্নয়ন। প্রমান পাওয়া যায় একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি একটি পরিবার ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট।
বাংলাদেশে মাদকের ভয়ানক বিস্তার যত শক্ত অবস্থান তৈরি করছে এর বিপরীতে যথাযথ চিকিৎসা কিংবা নিরাময়ের ব্যবস্থা ততটা জোরদার করা যাচ্ছে না। সারাদেশে মাদকাসক্তির সমস্যা যতটা ব্যপক, এর সমাধানের জাতীয় উদ্যোগ সে তুলনায় একেবারেই ক্ষুদ্র এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা খুবই নগন্য। বাস্তবতা হল বেশিরভাগ নিরাময় কেন্দ্রকে অনেক সময় একটি ভবনের ভেতরে জেলখানার মতো মনে হয়। সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসক থাকে না। সেবা দানকারীদের মধ্যে প্রায়শই মাদকাসক্তদের প্রতি অপরাধী হিসেবে আচরণ করার প্রবণতা রয়েছে।
তথ্য ও উপাত্তঃ
বাংলাদেশে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা কত, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তথ্যমতে দেশে মোট মাদকাসক্তের সংখ্যা ৫৬ লাখের বেশি হতে পারে। কিন্তু ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ফরেনসিক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা জরিপের সূত্রে সংখ্যাটি ৬৬ লাখ।
চিকিৎসার আওতায় নেই ৯৯ শতাংশ মাদকাসক্ত। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ মিলে মোট মাদকাসক্তের এক শতাংশেরও কম ব্যক্তিকে আনা সম্ভব হয়েছে চিকিৎসার আওতায়। সারা দেশে বিপুলসংখ্যক তরুণ ও যুবক এ দুরারোগ্য আসক্তির শিকার; কিন্তু মাদকাসক্তির চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে মাত্র চারটি। এছাড়া বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৫৫টি। মাদকাসক্তের সংখ্যা নিয়মিত বাড়ায় চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা আরো জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৫শ শয্যার চিকিৎসা ব্যবস্থা অতিক্রম করা সম্ভব হয়নি।
কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র তেজগাঁওয়ে শয্যাসংখ্যা মাত্র মোটে ১২৪। কেন্দ্রটিতে চিফ কনসালটেন্টসহ ২৬টি চিকিৎসক ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টের পদ থাকলেও অনেক পদ ফাঁকা। অননুমোদিত মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা বৈধ সংখ্যার কয়েক গুণও হতে পারে, যার প্রকৃত সংখ্যা কারও জানা নেই। মাদকাসক্তের চিকিৎসায় সরকারি ১০০ মনোরোগ বিশেষজ্ঞসহ আছেন মাত্র ২৭০ জন চিকিৎসক। আর উদ্বেগজনক ভয়ানক সংবাদ হল, গত তিন বছরে এসকল নিরাময় কেন্দ্রে হত্যার শিকার হয়েছে প্রায় ২০ জন। অনেকে আবার নিরাময় কেন্দ্রের আড়ালে মাদক মাদক ব্যবসার সাথে সিন্ডিকেট গড়েছেন।
মাদক নিরাময় কেন্দ্রের অব্যবস্থাপনাঃ
♦ একসময় যাঁরা মাদকাসক্ত ছিলেন, তাঁরাই এখন বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের মালিক।
♦ এসব কেন্দ্রে চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। দেওয়া হয়না সঠিক চিকিৎসা।
♦ সেখানে চিকিৎসার নিয়মকানুন মানা হয় না।
♦ বেশিরভাগ পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোই নামভিত্তিক সংগঠন এবং তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষিত কর্মী নেই।
♦ অভিজ্ঞ ডাক্তার ও নার্স এবং দক্ষতার অভাবে মাদকাসক্তরা থেকে যাচ্ছে চিকিৎসার বাইরে।
♦ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও অন্যান্য লোকবলের ঘাটতি অত্যন্ত প্রকট।
♦ মাদকাসক্ত চিকিৎসার নামে স্থানীয় গুন্ডা-পান্ডার সহযোগিতায় এখানে অনৈতিক কাজ সংঘটিত হয়।
♦ পরিবেশ এমন শোচনীয় যে রোগীদের নানা ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
♦ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে একেকজন একেক পদ্ধতিতে চিকিৎসা দিচ্ছেন। কেউ আটকে রাখছেন, আবার কেউ মারধর করাটাকে চিকিৎসা বলছেন। এগুলো আসলে কোনো চিকিৎসা নয়।
♦ নারকোটিক্সের কর্মকর্তারা কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। তাদের সম্মানে ভালো খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করে পরিদর্শন শেষে উপহারসামগ্রী দিয়ে সম্মানিত করা দীর্ঘদিনের রেওয়াজ।
মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তাঃ
✔ জীবন রক্ষাকারী উপকরণাদি ও অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়না নিরাময় কেন্দ্রে।
✔ অধিকাংশ নিরাময় কেন্দ্রে ঘুটঘুটে পরিবেশে আলো-বাতাস প্রবেশের সুযোগ নেই।
✔ মাদকাসক্তি সম্পূর্ণ নিরাময়ের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসা শেষে কমিউনিটি চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের বেশ কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হয় যা এসকল কেন্দ্রে অনুপস্থিত।
✔ হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া বেশিরঅতিক্রম ভাগ পুনর্বাসন কেন্দ্রই পুনর্বাসন কেন্দ্র নয়। এই কেন্দ্রগুলোতে আসা রোগীদের হাতে-পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে তালাবন্ধ কক্ষে রাখা হয়। এটি চিকিত্সা নয়, এটি মানবিক অবমাননা।
✔ মানসিক রোগীদেরও ভর্তি করা হয় এখানে। মাদকাসক্তি নিরাময়ের জন্য আন্তর্জাতিক চিকিৎসা প্রটোকল প্রতিপালনের বিধান থাকলেও সেগুলোর কোনো কিছুই মানা হয় না। এত অনিয়ম জেনেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
✔ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে একেকজন একেক পদ্ধতিতে চিকিৎসা দিচ্ছেন। কেউ আটকে রাখছেন, আবার কেউ মারধর করাটাকে চিকিৎসা বলছেন। এগুলো কোনো চিকিৎসা নয়।
আইন, বাস্তবতাঃ
মাদকাসক্তি পরামর্শ কেন্দ্র, নিরাময় কেন্দ্র ও পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা আইন ২০০৫ অনুযায়ী-
⮚ আইন অনুযায়ী কেন্দ্রে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচল থাকতে হবে কিন্তু বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই তা নেই।
⮚ একজন মাদকাসক্ত রোগীর জন্য কমপক্ষে গড়ে ৮০ বর্গফুট মেঝের জায়গা থাকতে হবে কিন্তু বাস্তবে নেই।
⮚ পর্যাপ্ত নিরাপত্তার সুরক্ষিত ব্যবস্থা থাকতে হবে কিন্তু এসকল কেন্দ্রে মারামারি ও হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে।
⮚ একজন চিকিৎসক (মেডিকেল অফিসার), একজন মনোচিকিৎসক, একজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, দুজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স, একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও জীবন রক্ষাকারী উপকরণ এবং ওষুধপথ্য থাকতে হবে। বাস্তবে এর কিছুই দেখা যায়না।
⮚ মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত কি না, তা নির্ণয়ের জন্য এক্স-রে, ইসিজিসহ নানা পরীক্ষার দরকার হয়। কিন্তু এসব পরীক্ষার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে।
⮚ রোগীর কেস হিস্ট্রি সংরক্ষণের কথা বলা হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা করা হয়না।
প্রভাবঃ
❖ সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নিরাময় কেন্দ্রে মাদকাসক্ত ব্যক্তি আসার পর তাঁকে প্রশিক্ষিত লোক দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কাউকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তাঁকে বিশেষ কক্ষে রাখতে হবে। ওই কক্ষের মেঝে ও দেয়ালে ফোমজাতীয় পদার্থ থাকবে, যাতে রোগী পড়ে গিয়ে এবং কোনোভাবে মাথায় আঘাত না পান।
❖ মাদকাসক্তি ছাড়াতে রোগীকে কাউন্সেলিংয়ের মধ্যে রাখতে হয়। অথচ এসব কেন্দ্রে রোগীদের মারধর কিংবা মানসিক চাপে রেখে বন্দীদশায় আরো অসুস্থ করে দেওয়া হয় যার ক্ষতিকর প্রভাব রোগীর পরিবারে পড়ে।
❖ মাদকাসক্ত যে নিজেই মাদকের ক্ষতিগ্রস্ততার শিকার হয় বিষয়টি এমন নয়, মাদকসেবীর সাথে সাথে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী, তথা সামগ্রিক সমাজব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। একটি পরিবার যখন অর্থনৈতিক টানাপড়েন সত্ত্বেও চিকিৎসার জন্য নিরাময় কেন্দ্রে পাঠায় তখন হত্যার মতো ঘটনার শিকার হতেও দেখা যায়।
❖ তেমন কোনো শারীরিক অ্যাক্টিভিটিজ না থাকায় এবং অদক্ষতার সাথে ওষুধ প্রয়োগ করায় মাদকাসক্তরা শারীরিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে।
❖ অনেকেই এসব কেন্দ্রে গিয়ে সোর্স খুঁজে পায়, মাদকাসক্ত না হলেও ড্রাগস রিলেটেড দরজা খুলে যায় অন্য যারা ভর্তি থাকে তাদের মাধ্যমে।
❖ এক সমীক্ষায় জানা যায়, শতকরা ৮০ ভাগ মাদকাসক্তের বয়স ১৫-৩০ বছরের মধ্যে। অর্থাৎ আমাদের মূল চালিকাশক্তির একটি বড় অংশ মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ছে যা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রগতি ও সমৃদ্ধির অন্তরায়।
❖ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং সার্বক্ষণিক চিকিৎসক নেই অনেক কেন্দ্রে। অস্বাস্থ্যকর এবং নোংরা পরিবেশে গাদাগাদি করে রাখা হয় রোগীদের। অপচিকিৎসা ও অর্থনৈতিক ক্ষতি ছাড়া তেমন কিছু মেলে না।
প্রস্তাবনাঃ
● দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি সরকারি পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন ও এর সঠিক তদারকি নিশ্চিত করতে হবে।
● জেলা হাসপাতালে মাদক নিরাময় সেল স্থাপন করে মাদকাসক্তদের প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
● মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মাদকাসক্তি নিরাময় দুটি ভিন্ন বিষয়। এসব প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা উচিৎ। প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত ব্যবস্থা থাকতে হবে।
● বেসরকারি পরিচালনায় কোনো নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিচালিত হলে তার যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা সরকারের নির্দিষ্ট বিভাগকে নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য সরকারের নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে।
● আইন অনুযায়ী, নিরাময় কেন্দ্রে একজন মাদকাসক্ত রোগীর জন্য গড়ে কমপক্ষে ৮০ বর্গফুট জায়গা এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা ও নিরিবিলি সুন্দর পরিবেশ থাকতে হবে।
● নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা গ্রহণের পর রোগীদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে কিছুদিন কাটাতে হয়; কিন্তু পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোতে স্থান সংকুলান হয় না বলে অধিকাংশ মাদকাসক্ত রোগী বাড়ি চলে যায়। প্রকৃতপক্ষে মাদকাসক্তি থেকে অধিকাংশেরই নিরাময় ঘটে না। এক্ষেত্রে সরকারি পুনর্বাসন কেন্দ্র বাড়াতে হবে।
● বেশিরভাগ নিরাময় কেন্দ্রে মাদকাসক্তি শনাক্তে ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা নেই। মৌখিক স্বীকারোক্তি অথবা অভিভাবকের কথার ভিত্তিতে রোগী ভর্তি করা হয়। নিরাময় কেন্দ্রগুলোকে অনেকেই মানসিক হাসপাতাল বলে মনে করেন। এ কারণে কেন্দ্রগুলোতে মানসিক রোগী ভর্তি হতে দেখা যায়। মাদকাসক্তি এবং মানসিক রোগ দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস। এটি একজন মাদকাসক্ত রোগীর উপর মানসিক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই ডোপ টেস্ট নিশ্চিত করা জরুরী।
● মানুষের মধ্যে মাদক চিকিৎসা সম্পর্কে বোঝার ভুল রয়েছে। মাদকাসক্তদের একটি স্বাস্থ্যকর এবং অর্থবহ জীবনের দিকে পরিচালিত করার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানেরও অভাব রয়েছে। যা কার্যকরী কোনো সুফল দেয়না। তাই এসকল কেন্দ্রে নিয়মিত সমন্বিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
উপসংহারঃ
একটি বৈশ্বিক প্রতিবেদনে জানা যায়, মাদকাসক্তির ফলে বিশ্বে প্রায় দুই লক্ষ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করে। মাদকাসক্তদের মধ্যে ছাত্র, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, রিকশাচালক এবং অন্যান্য পেশার মানুষেরাও রয়েছে। এমনকি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্টরাও মাদকে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। সমাজের প্রতিষ্ঠিত নেতারাও মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। শিক্ষক এবং চিকিৎসক যারা মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালনের কথা তারাও কোন না কোনভাবে মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। সরকারি নিরাময় কেন্দ্রগুলোর খুবই কমসংখ্যক মাদকাসক্তের চিকিৎসা দেওয়ার সামর্থ্য আছে। বলা বাহুল্য, সেই চিকিৎসার মানও ভালো নয়।
জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে মাদকাসক্তদের চিকিৎসায় একটি ওয়ার্ড বরাদ্দ দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আঞ্চলিক পর্যায়ের নিরাময় কেন্দ্রগুলোকে ২৫ শয্যায় উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরগুলোতে ৫০ শয্যার নিরাময় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পরিল্পনা অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। সরকারি পর্যায়ে নিরাময় কেন্দ্রের অবকাঠামো তৈরি করে পরিচালনার জন্য বেসরকারি পর্যায়ে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসকল উদ্যোগ কার্যকরী ভাবে বাস্তবায়ন ও পরিচালনা প্রয়োজন।
একটি পরিবার যেমন একটি সুন্দর ও সুস্থ সমাজ উপহার দিতে পারে তেমনি একটি সুস্থ সমাজ একটি পরিচ্ছন্ন ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনে অত্যাবশ্যক উপাদান হিসেবে পরিগণিত হয়। তাই এই ব্যপারে সরকারী কার্যকরী উদ্যোগের বিকল্প নেই।
লেখকের পরিচয়ঃ
মোহাম্মদ আল হাসিব
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন
পলিসি এনভয়- গ্রাসরুটস্ নেটওয়ার্ক, ইয়ুথ পলিসি ফোরাম