ইতিহাসের ১৬ তম নারী হিসেবে এবারে সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার অর্জন করেছেন মার্কিন কবি লুইজ গ্লিক। সাহিত্যে নোবেলজয়ীদের মধ্যে কবিদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশ কম, নারী কবির সংখ্যা সে তুলনায় নগণ্যই৷ তাই লুইজের নোবেল অর্জন অবশ্যই বিশেষভাবে প্রশংসার দাবিদার৷ নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে লুইজের দৃঢ় ও সুষ্পষ্ট কাব্যিক মাধুর্য ব্যক্তিসত্তাকে সার্বজনীনতার মাত্রা প্রদান করে। একইসঙ্গে তার লেখনীকে বুদ্ধিদীপ্ত ও কাব্যরসে পরিপূর্ণ হিসেবে অভিহিত করেছেন পুরষ্কার কমিটির চেয়ারম্যান৷
সাহিত্য বিশ্লেষকেরা লুইজের লেখাতে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের আবহ পর্যবেক্ষণ করেছেন। মূলত আত্মজীবনীমূলক কবি হিসেবে তাকে আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকলেও তার লেখনীতে ইতিহাস, মিথ, প্রকৃতি ও ব্যক্তিজীবনের নানা অনুভূতির প্রাধান্য পেয়েছে৷ একাকীত্ব ও নিঃসঙ্গতার শক্তিশালী প্রতিফলন ঘটেছে তার শব্দমহিমায়৷
১৯৪৩ সালে নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেন লুইজ। শৈশব থেকেই লেখালেখির দিকে ঝোঁক ছিল তার। ফলে তার কাব্যে পারিবারিক আবহসহ মানবজীবনের শৈশবের নানা স্মৃতি ফুটে উঠেছে দারুণ ভঙ্গিমায়৷
লুইজের সাহিত্যে একইসাথে ভাষার স্পষ্ট ও সাবলীল ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়৷ গতানুগতিক ছন্দ মিলিয়ে কবিতা রচনার পথ তিনি মোটেও অনুসরণ করেননি৷ বরং নিত্যনতুন অভিনব পন্থা অনুসরণ করে তার কবিতাকে সাজিয়েছেন ।
লুইজের রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ফার্স্টবর্ন’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৮ সালে। এরপর থেকে কিছুটা নিভৃত কিন্তু অদম্য গতিতে কবিতার জগতে বিচরণ করেছেন তিনি। সাবলীলতার সঙ্গেই সমসাময়িক মার্কিন সাহিত্যজগতে প্রভাব বিস্তার করেন।
এ পর্যন্ত ১২টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তার। তার মধ্যে ‘দ্য ওয়াইল্ড আইরিস’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯৯৩ সালে তিনি পুলিৎজার পুরষ্কার জিতে নেন। এই গ্রন্থের স্নো-ড্রপ কবিতাটি বিশেষভাবে উদ্ধৃত হয়েছে নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে৷ এছাড়াও ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ডের মতো সম্মানজনক পুরষ্কারও রয়েছে তার ঝুলিতে৷
লুইজ শিক্ষকতা করেছেন সারা লরেন্স কলেজ, উইলিয়াম কলেজ ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বনামধন্য কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বর্তমানে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি অধ্যাপনা করছেন ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে৷
Author : Mashrefa Tarannum
Authors Bio :শিক্ষার্থী, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।